সত্যজিৎ রায়ের সাহিত্যকর্ম
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সত্যজিৎ রায় যেমন ছিলেন একজন বিখ্যাত বাঙালি ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক, তেমনই তিনি বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদানের জন্যও বিখ্যাত. তাঁর সৃষ্ট বিখ্যাত চরিত্র হল গোয়েন্দা ফেলুদা ও বৈজ্ঞানিক প্রফেসর শঙ্কু. তিনি এই দুটি চরিত্র ছড়াও অনেক ছোট উপন্যাস ও ছোট গল্পো রচনা করেছেন। তারঁ লেখার মূল লক্ষ্য ছিল তরুণ পাঠক বর্গ, যদিও তিনি আবালবৃদ্ধবনিতার কাছে প্রিয় লেখক ছিলেন।
তাঁর অধিকাংশ উপন্যাস ও গল্প প্রকাশ হয় কলকাতার আনন্দ প্রকাশনের মাধ্যমে, এবং তাঁর অধিকাংশ স্ক্রীনপ্লেগুলি তাঁর বন্ধু নির্মাল্য আচার্য সম্পাদিত "ঈক্ষণ" নামে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৯৯০-এর দশকের মঝামাঝি তাঁর অনেক চলচ্চিত্র বিষয়ক লেখা এবং ছোত গল্পের সংকলন পাশ্চাত্যেও প্রকাশিত হয়। তাঁর অনেক গল্পই ইংরাজিতে অনুদিত ও প্রকাশিত হয়েছে।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] ফেলুদা সিরিজ
এই বিষয়ে মূল নিবন্ধের জন্য দেখুন: ফেলুদা
ফেলুদা, যাঁর আসল নাম প্রদোষ চন্দ্র মিত্র, হলেন কলকাতাবাসী একজন শখের গোয়েন্দা. সধারণতঃ তাঁর সঙ্গী দুজন: তোপসে (তাঁর খুড়তুতো ভাই- তপেশ রঞ্জন মিত্র) এবং লালমোহনবাবু (লালমোহন গাঙ্গুলী যিনি নিজে জটায়ু ছদ্মনামে রহসরোমাঞ্চের গল্প লেখেন। সত্যজিৎ রায় ৩৫টি ফেলুদার গল্প লেখেন, যার সবই খুব জনপ্রিয় হয়, এবং এর মধ্যে দুটিকে নিয়ে তিনি নিজেই চলচিত্র তৈরী করেন – সোনার কেল্লা (চলচ্চিত্র) (The Golden Fortress) (1974) এবং জয় বাবা ফেলুনাথ (The Elephant God) (1978).
[সম্পাদনা] প্রফেসর শঙ্কুর গল্পগুলি
এই বিষয়ে মূল নিবন্ধের জন্য দেখুন: প্রফেসর শঙ্কু
প্রফেসর শঙ্কু' বা ত্রিলোকেশ্বর শঙ্কু, সত্যজিৎ রায় সৃষ্ট একজন কল্পবিজ্ঞানের বৈজ্ঞানিক। তিনি গিরিডিতে উশ্রী নদীর ধারে থাকেন। সঙ্গে থাকে তাঁর ভৃত্য প্রহ্লাদ ও কুকুর নিউটন। ছেলেবেলায় তিনি ছিলেন একজন বিস্ময় বালক ও বহু লখাপড়ার খেতাব অর্জন করছন।।তাঁর নিজের গবষণআগারে বসে তিনি প্রতিনিয়ত নতুন গবেষণা ও নিত্যনতুন উদ্ভাবনা করেন। এইসব উদ্ভাবনার জন্য তিনি বিশ্ববিখ্যাত। তাঁর গল্পগুলির পটভুমিকা সারা পথিবীর বিভিন্ন এলাকা জুড়ে।
[সম্পাদনা] তারিণী খুড়োর গল্প
এই বিষয়ে মূল নিবন্ধের জন্য দেখুন: তারিণী খুড়ো
তারিণী খুড়ো হলেন একজন আইবুড়ো (অবিবাহিত) বৃদ্ধ যিনি যিনি নিজের জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নিয়ে গল্প বলতে ভালোবাসেন.তাঁর অনেক গল্পই রোমাঞ্চকর ভয়ের বা ভুতের গল্পের মত হয়ে যায় আবার অনেক গল্পে তাঁর উপস্থিত বুদ্ধি ও বিচক্ষণতার প্রমাণ পাওয়া যায়।
[সম্পাদনা] অন্যান্য ছোট গল্প
তাঁর সৃষ্ট বিখ্যাত চরত্রগুলির গল্প ছাড়াও সত্যজিৎ রায় আরো নানা গল্প রচনা করেছেন। এগুলির অনেকগুলিই সন্দেশ পত্রিকায় অথবা বারোটি করে গল্পের সংকলন হিসাবে প্রকাশিত হয়েছে- যেগুলি সরচিপূর্ণ পটভুমিকায় গড়ে তোলা, এবং গল্প হিসাবে প্রায় শেষ অবধি সাদামাঠা কিন্তু সমাপ্তির ঠিক আগে গল্প অদ্ভুত মোড় নিয়ে পাঠককে অবিস্মরণীয় অনুভুতির স্বাদ দিয়েছে। অধিকাংশ গল্পেই দেখানো হয়েছে কিভাবে সামান্য কোন ঘটনা কারুর জিবনে গভীর রেখাপাত করেছে, আবার কোন কোনটি রোমহর্ষক ভয়ের গল্প। এদের ভাষা খুবই সরল ও সাবলীল।
সত্যজিৎ রায় অনেক ছোট গল্প ইংরাজী থেকে অনুবাদও করেন যেগুলি বেশীরভাগই রোমাঞ্চকর গল্প যাদের মধ্যে কয়েকটি ব্রাজিলের কালো বাঘ বইটিতে প্রকাশিত হয়।
[সম্পাদনা] কবিতা
সত্যজিৎ রায় বেশ কিছু কবিতা অনুবাদ করেন ও কয়েকটি লিমেরিক রচনা করেন যেগুলির সংকলন - তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম নামে প্রকাশিত হয়।
[সম্পাদনা] মোল্লা নাসীরুদীনের গল্প
মধপ্রাচ্যের মোল্লা নাসীরুদ্দীনের অনেকগুলি গল্প সংগ্রহ করে সত্যজিৎ রায় মোল্লা নাসীরুদীনের গল্প নামে একটি সংকলন প্রকাশ করেন।
[সম্পাদনা] অন্যান্য
ফটিকচাঁদ গল্পটি একটি কিশোরকে নিয়ে; সুজন হরবোলা একজন হরবোলার কাল্পনিক জীবনবৃত্তান্ত। একেই বলে শুটিং সত্যজিত রায়ের নিজের শুটিংএর অভজ্ঞতা ও চিন্তা ভাবনাকে নিয়ে লেখা. যখন ছোটো ছিলাম হল তাঁর বলয়কালের স্মৃতিচারণ। Our Films, Their Films (আমাদের ছবি, তাদের ছবি) তাঁর চলচিত্র সমলোচনার সংকলন। বিষয় চলচ্চিত্র তাঁর লেখা আরেকটি চলচ্চিত্রের বই।