ঘূর্ণিঝড়
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ঘূর্ণিঝড় বা ঘুর্নিবাত্যা হল ক্রান্তীয় অঞ্চলের সমুদ্রে সৃষ্ট বৃষ্টি, বজ্র ও প্রচন্ড ঘূর্ণি বাতাস সম্বলিত আবহাওয়ার একটি নিম্ন-চাপ প্রক্রিয়া (low pressure system) যা নিরক্ষীয় অঞ্চলে উৎপন্ন তাপকে মেরু অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত করে। এই ধরনের ঝড়ে বাতাস প্রবল বেগে ঘুরতে ঘুরতে ছুটে চলে বলে এর নামকরণ হয়েছে ঘুর্নিঝড়। ঘুর্নিঝড়ের ঘুর্নন উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে।
ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত হানলে যদিও দুর্যোগের সৃষ্টি হয়, কিন্ত্ত এটি আবহাওয়ার একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যা পৃথিবীতে তাপের ভারসাম্য রক্ষা করে। গড়ে পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ৮০ টি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। এর অধিকাংশই সমুদ্রে মিলিয়ে যায়, কিন্ত্ত যে অল্প সংখ্যক উপকূলে আঘাত হানে তা অনেক সময় ভয়াবহ ক্ষতি সাধন করে।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির কারণ
ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির কৌশল সম্পূর্ণরূপে জানা এখনো বিজ্ঞানীদের পক্ষে সম্ভব হয় নি। তবে এটি সৃষ্টির জন্য আনুষংগিক কিছু প্রভাবক কাজ করে।
সমুদ্রের তাপমাত্রা- ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা কমপক্ষে ২৬-২৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকা আবশ্যক এবং একটি নির্দিষ্ট গভীরতা(কমপক্ষে ৫০ মিটার)পর্যন্ত এ তাপমাত্রা থাকতে হয়। এজন্য আমরা দেখি সাধারণত কর্কট ও মকর ক্রান্তিরেখার কাছাকাছি সমুদ্র গুলিতে গ্রীষ্মকালে বা গ্রীষ্মের শেষে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। অন্য কোথাও হয় না।
নিরক্ষরেখা থেকে দূরত্ব- নিরক্ষীয় অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে পৃথিবীপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়ে গেলে উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু হালকা হয়ে উপরে উঠে যায়। এই শূন্যস্থান পূরণের জন্য মেরু অঞ্চল থেকে শীতল বায়ু উত্তর গোলার্ধে দক্ষিণে নিরক্ষরেখার দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়। কিন্ত্ত পৃথিবীর ঘূর্ণনের প্রভাবে সৃষ্ট করিওলিস শক্তির (coriolis force) কারণে এ বায়ু সোজাসুজি প্রবাহিত না হয়ে উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যায়। এ জন্য আমরা দেখি, উত্তর গোলার্ধে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘুরতে থাকে। নিরক্ষরেখার উপর এ শক্তির প্রভাব শূন্য। কাজেই, এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির অনুকূলে থাকলেও করিওলিস শক্তি ন্যূনতম থাকায়, নিরক্ষরেখার ০ ডিগ্রী থেকে ৫ ডিগ্রীর মধ্যে কোন ঘূর্ণিঝড় হতে দেখা যায় না। সাধারণত, নিরক্ষরেখার ১০ ডিগ্রী থেকে ৩০ ডিগ্রীর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়।
বায়ুমন্ডলের আর্দ্রতা- বায়ুমন্ডলের নিম্ন ও মধ্যস্তরে অধিক আর্দ্রতা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
বিরাজমান বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতি- ঘূর্ণিঝড় স্বতস্ফুর্তভাবে সৃষ্টি হতে পারে না। সমুদ্রে আগে থেকে বিরাজমান বিক্ষুব্ধ কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি থাকলে, ঘূর্ণিঝড় সাধারণত সেটাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। এছাড়া, পশ্চিমমুখী নিম্ন বায়ুচাপসম্পন্ন পূবালী স্রোত (easterly waves), আবহাওয়ায় উচ্চতার সাথে সাথে বায়ুর গতি ও দিকের স্বল্প পরিবর্তন এবং দ্রুত শীতলীকরণের ফলে নির্গত তাপ ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য সহায়ক।
[সম্পাদনা] ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির অঞ্চল ও সময়কাল
ঘূর্ণিঝড় উৎপন্ন অঞ্চল হিসেবে ক্রান্তীয় অঞ্চলের সমুদ্রগুলিকে সাতটি বেসিন বা অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ ও হুঁশিয়ারী প্রদানের জন্য বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার অধীনে বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া বিভাগ কাজ করছে। নীচে সাতটি বেসিনের নাম এবং সেখানে তদারককারী সংস্থাগুলোর তালিকা দেয়া হলঃ
বেসিন এবং তদারককারী সংস্থা | |
---|---|
বেসিন | বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার অধীনস্থ আবহাওয়া বিভাগ |
উত্তর আটলান্টিক মহাসাগর | ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার |
উত্তর পূব প্রশান্ত মহাসাগর | ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার এবং সেন্ট্রাল প্যাসিফিক হারিকেন সেন্টার |
উত্তর পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর | জাপান আবহাওয়া সংস্থা |
উত্তর ভারত মহাসাগর | প্যানেল দেশসমূহঃ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা,মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড আবহাওয়া বিভাগ |
দক্ষিণ পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর | জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার |
দক্ষিণ পূব ভারত মহাসাগর | ব্যুরো অফ মিটিওরলজি (অস্ট্রেলিয়া) |
দক্ষিণ পশ্চিম ভারত মহাসাগর | মিটিও ফ্রান্স |
প্রতিটি বেসিনে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির মৌসুম ভিন্ন ভিন্ন। উত্তর আটলান্টিকে ঘূর্ণিঝড় মৌসুম শুরু হয় জুনের ১ তারিখ এবং শেষ হয় নভেম্বর ৩০ তারিখে। বাংলাদেশ উপকূলে মূলতঃ বর্ষাকালের শুরুতে এপ্রিল-মে মাসে এবং বর্ষার শেষে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ দেখা দেয়। তবে বর্ষাকালেও বিক্ষিপ্তভাবে ঘূর্ণিঝড় হতে দেখা যায়।
[সম্পাদনা] সাইক্লোন, হারিকেন ও টাইফুন
শুনতে তিনটি পৃথক ঝড়ের নাম মনে হলেও আসলে এগুলো অঞ্চলভেদে ঘূর্ণিঝড়েরই ভিন্ন ভিন্ন নাম। সাধারণভাবে ঘূর্ণিঝড়কে সাইক্লোন বা ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বলা হয়। সাইক্লোন শব্দটি এসেছে গ্রীক শব্দ কাইক্লোস (kyklos) থেকে, যার অর্থ বৃত্ত বা চাকা। এটা অনেক সময় সাপের বৃত্তাকার কুন্ডলী বুঝাতেও ব্যবহূত হয়। ১৮৪৮ সালে হেনরী পিডিংটন তার ‘সেইলর’স হর্ণ বুক ফর দি ল’অফ স্টর্মস’ বইতে প্রথম সাইক্লোন শব্দটি ব্যবহার করেন। তারপর থেকেই ঘূর্ণিঝড় বুঝাতে সাইক্লোন শব্দের ব্যবহার শুরু হয়।
আটলান্টিক মহাসাগর এলাকা তথা আমেরিকার আশেপাশে ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতিবেগ যখন ঘন্টায় ১১৭ কি.মি.-এর বেশী হয়, তখন জনগণকে এর ভয়াবহতা বুঝাতে হারিকেন শব্দটি ব্যবহার করা হয়। মায়া দেবতা হুরাকান- যাকে বলা হত ঝড়ের দেবতা, তার নাম থেকেই হারিকেন শব্দটি এসেছে। তেমনিভাবে,প্রশান্ত মহাসাগর এলাকা তথা চীন, জাপানের আশেপাশে হারিকেন- এর পরিবর্তে টাইফুন শব্দটি ব্যবহূত হয়, যা ধারণা করা হয় চীনা শব্দ টাই-ফেং থেকে এসেছে, যার অর্থ প্রচন্ড বাতাস। অনেকে অবশ্য মনে করেন ফার্সি বা আরবি শব্দ তুফান থেকেও টাইফুন শব্দটি আসতে পারে।
[সম্পাদনা] ঘূর্ণিঝড়ের শ্রেণীবিভাগ
সাতটি বেসিনেই বাতাসের গতিবেগ অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়কে কতগুলো শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। আটলান্টিক এলাকার জন্য, প্রাথমিক অবস্থায় বাতাসের গতিবেগ যখন ঘন্টায় ৬২ কি.মি.-র নীচে থাকে, তখন একে শুধু নিম্নচাপ (Tropical depression) বলা হয়। বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কি.মি.-এ উন্নীত হলে এটিকে একটি নাম দেয়া হয় এবং ঘন্টায় ৬২ কি.মি. থেকে ১১৭ কি.মি. ব্যবধানে এটিকে একটি ঝড় বা Tropical storm বলা হয়। বাতাসের গতিবেগ যখন ঘন্টায় ১১৭ কি.মি.-এর বেশী হয়, তখন এটি হারিকেন পর্যায়ে উন্নীত হয়। বাতাসের তীব্রতা এবং ধ্বংসক্ষমতা অনুযায়ী হারিকেনকে আবার এক থেকে পাঁচ মাত্রার ৫ টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। আবিষ্কারকের নামানুসারে এটি সাফির-সিম্পসন স্কেল নামে পরিচিত।
ভারত মহাসাগর এলাকা এবং বাংলাদেশের জন্য ঘূর্ণিঝড়ের শ্রেণীবিন্যাস ভিন্ন। এখানে নিম্নচাপকে আবার শুধু নিম্নচাপ এবং গভীর নিম্নচাপ এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কি.মি. থেকে ১১৭ কি.মি.-এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় এবং প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড় নামে আরো দুই ভাগ করা হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ১১৭ কি.মি.-এর বেশী হলে যে নামটি ঠিক করা হয়েছে তা বেশ লম্বা- হারিকেন ক্ষমতা সম্পন্ন প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড়।
[সম্পাদনা] হারিকেনের নামকরণ
আটলান্টিক মহাসাগর এলাকায় বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৬২ কি.মি.-এ উন্নীত হলে অর্থাৎ নিম্নচাপ যখন ঝড়ে পরিণত হয়, তখন এটিকে চিহ্নিত করার জন্য একটি নাম দেয়া হয়। হারিকেন অবস্থাতেও এগুলো এ নামেই পরিচিত হয়। ইংরেজী বর্ণমালা অনুসারে ২১ টি নাম (৫ টি অক্ষর বাদ দিয়ে) এক বছরের জন্য বাছাই করা হয় যেগুলো সাধারণত পর্যায়ক্রমিকভাবে ছেলে ও মেয়েদের নাম দিয়ে রাখা হয়। যেমন-২০০৬ সালের প্রথম হারিকেনটির নাম আলবার্টো, দ্বিতীয়টি বেরিল ইত্যাদি। এক বছরে ২১ টির বেশী হারিকেন উৎপন্ন হলে (২০০৫ সালে যেমন হয়েছিল), গ্রীক বর্নমালা অনুযায়ী নামকরণ করা হয়- হারিকেন আলফা, বিটা ইত্যাদি। এরকম ছয় বছরের জন্য নাম আগেই নির্ধারণ করে রাখা হয় এবং ছয় বছর পর পর একই নামগুলো আবার ফিরে আসে। যেমন ২০০৫ সালের নামগুলো আবার ২০১১ সালে ফিরে আসবে। তবে ক্যাটরিনা নাম আর কখনো ফিরে আসবে না, কারণ ধ্বংসাত্মক হারিকেনের নামগুলো তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয় এবং নতুন নাম নির্ধারণ করা হয়। ২০১১ সালে ক্যাটরিনার জায়গায় তাই নতুন হারিকেনের নাম হবে ক্যাটিয়া (Katia)।
বাংলাদেশ তথা উত্তর ভারত মহাসাগর এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয় না। তার পরিবর্তে, আরব সাগর এলাকায় উৎপন্ন ঝড়গুলোকে A এবং বঙ্গোপসাগরে উৎপন্ন ঝড়গুলোকে B অক্ষর দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। ১৯৯১ সালের ২৯ শে এপ্রিল যে ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত হেনেছিল তার পরিচয় TC-02B হিসেবে, তার মানে এটি ছিল ১৯৯১ সালে বঙ্গোপসাগরে উৎপন্ন দ্বিতীয় ঘূর্ণিঝড়। সম্প্রতি সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নাম মালা হলেও আসলে এটি কোন নাম নয়। একাধিক ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের সৃষ্টি হওয়াতে বিজ্ঞানীরা একে ঘূর্ণিমালা বলছিলেন, সেটাই সংক্ষেপে মালা নামে পরিচিত হয়েছিল। পৃথিবীর অন্যান্য মহাসাগরে উৎপন্ন ঘূর্ণিঝড়গুলিরও বিভিন্ন নাম দেয়া হয়।
[সম্পাদনা] ঘূর্ণিঝড় ও গ্লোবাল ওয়ার্মিং
সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞানীরা অনেকে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে দায়ী করেছেন। ক্রান্তীয় অঞ্চলের সমুদ্রের তাপমাত্রা ১৯৭০ সালের পর প্রায় এক ডিগ্রী ফারেনহাইট বৃদ্ধি পেয়েছে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এই এক ডিগ্রী ফারেনহাইট তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে এখন আগের চেয়ে শক্তিশালী এবং বেশী সংখ্যায় ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন, আটলান্টিকে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা বৃদ্ধি বা হ্রাস প্রাকৃতিক একটি চক্রের কারণে ঘটে। এই চক্রের বৈজ্ঞানিক নাম আটলান্টিক মাল্টিডিকেডাল ওসিলেশন যা সংক্ষেপে AMO নামে পরিচিত। এই চক্রের কারণে প্রকৃতিতে ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা কয়েক দশক ধরে কখনও বাড়ে, আবার কয়েক দশক ধরে কমে। কিনতু বিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্তমানে চক্রের এই বর্ধিষ্ণু ধারা বিগত বর্ধিষ্ণু ধারাগুলোর চাইতে অস্বাভাবিক রকমের বেশী। তারা এই অস্বাভাবিকতার জন্য গ্লোবাল ওয়ার্মিং-কে দায়ী করছেন। বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য প্রধানত অধিক হারে গ্রীনহাউস গ্যাস (CO2 ইত্যাদি) নির্গমন দায়ী যা মূলতঃ উন্নত বিশ্বে স্থাপিত বিভিন্ন পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে নির্গত হয়।
[সম্পাদনা] ঘূর্ণিঝড়ে সৃষ্ট দুর্যোগসমূহ
বাংলাদেশে ১৯৭০ সালের ১২ই নভেম্বর ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ লোক মৃত্যুবরণ করেছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে ঘূর্ণিঝড়ে এত বেশী লোক আর কখনো মারা যায় নি।
১৯৯১ সালের ২৯শে এপ্রিল ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় এক লক্ষ চল্লিশ হাজার লোক নিহত হয়েছিল এবং চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল। ১৮৭৬ সালের বিখ্যাত বাকেরগঞ্জ সাইক্লোনে প্রায় ২ লক্ষ লোক নিহত হয়েছিল, এর মধ্যে প্রায় এক লক্ষ লোক মারা গিয়েছিল দুর্ভিক্ষ ও মহামারীতে। আইন-ই-আকবরী গ্রন্থে আমরা ১৫৮২ খ্রীষ্টাব্দে বাকেরগঞ্জ তথা বর্তমান বরিশালে আঘাত হানা আরেকটি ঘূর্ণিঝড়ের কথা জানতে পারি, যেটিতেও প্রায় ২ লক্ষ লোক নিহত হয়েছিল।
পক্ষান্তরে, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ঘূর্ণিঝড়ে সবচাইতে বেশী লোক নিহত হয়েছিল ১৯০০ সালে টেক্সাসের গ্যালভেস্টন উপকূলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ে। প্রায় দশ হাজার লোক এতে নিহত হয়েছিল। এর পরপরই গ্যালভেস্টন উপকূলীয় সমুদ্রে লেভী বা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। গত বছর লুইজিয়ানা-মিসিসিপি উপকূলে আঘাত হানা বিখ্যাত হারিকেন ক্যাটরিনা ছিল সম্পদের ক্ষতি হিসাবে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ঘূর্ণিঝড়। প্রায় ৭৫ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ এতে ধ্বংস হয়েছিল, যদিও ঘূর্ণিঝড়ে নিহতের সংখ্যা ছিল মাত্র ১৬০০। গত বছর আটলান্টিক উপকূলে রেকর্ড সংখ্যক হারিকেন সৃষ্টি হয়েছিল এবং তার মধ্যে বেশ কয়েকটি যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলে আঘাত হানে।
[সম্পাদনা] তথ্যসূত্র
- হারিকেনঃ কোপিং উইথ ডিসাস্টার, এডিটর- রবার্ট সিম্পসন, আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়ন, ওয়াশিংটন ডি সি, ২০০৩।
- ইংলিশ উইকিপিডিয়া।
[সম্পাদনা] আরও দেখুন
- WMO guide on cyclone terminology
- Summary of cyclone terminology from NOAA FAQ
- Create-a-Cane Interactive fun site from NOAA, allows to specify conditions and see how they impact storm formation
- NASA Hurricane Web Page - Data, research, science & multimedia resources from NASA
- NOVA scienceNOW: Hurricanes
- Mariner's Guide for Hurricane Awareness
- The Hurricane Hut - Information on tropical cyclones, as well as information on hurricane naming, and all Atlantic storms 1950-2005
- The Hurricane Newspaper Archive
- Hurricanes: A Primer on Formation, Structure, Intensity Change and Frequency, by Dr. Robert Hart
[সম্পাদনা] বহির্সংযোগ
- ঘূর্ণিঝড় উইকি ট্রপিকাল ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে একটি উইকিয়া, "সাইক্লোপিডিয়া" নামেও পরিচিত
- Current Hurricane Charts
- WebCamPlaza Big collection of hurricane webcams.
- www.worldhurricanes.com- Lates news from the WN network.
- Tropical Cyclones - Chapter from the online edition of Nathaniel Bowditch's American Practical Navigator
- Hurricane Alley - tracking
- Live Hurricane Talk and Information Archive
- NOAA's Tropical Cyclone FAQ
- Hurricanes & climate change
- Global climatology of tropical cyclones
- Caribbean Hurricane Network
- 1995 Mediterranean "Hurricane"
- Atlantic hurricanes track animations
- Tropical cyclone pictures and movies, from the United Kingdom Met Office
- Global Warming & Hurricanes - Review based on latest articles in Science and Nature. Graph of trends in 6 hurricane basins.
- Hurricane Havens Handbook for the North Atlantic Ocean
- Typhoon Havens Handbook for the Western Pacific and Indian Oceans
- Tropical Storm Risk
- Statistical models of hurricane activity
- Hurricanes, global warming, and global politics
- Dr. Jeff Masters Blog at Weather Underground
- Hurricane Dictionary Hurricane and Tropical Storms
- Natural Disasters - Hurricanes Great research site for kids.
- Hurricane Digital Memory Bank Preserving the Stories and Digital Record of Hurricanes Katrina, Rita, and Wilma
- Baguio reference from the American Meteorological Society