ভারতীয় রেল
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ভারতীয় রেল | |
---|---|
সদরদপ্তর | নয়া দিল্লী |
রেল মন্ত্রী | লালু প্রসাদ যাদব |
নেটওয়ার্ক | ৬৩,১৪০ কিমি |
সময়কাল | ১৮৫৩ — বর্তমান |
ট্র্যাকের গেজ | ব্রড , মিটার, সরু |
রাজস্ব | ৪৬,৭৮৫ কোটি ভারতীয় টাকা |
ওয়েবসাইট | http://www.indianrailways.gov.in |
ভারতীয় রেল (হিন্দি भारतीय रेल, ইংরেজি Indian Railways) ভারতের একটি সরকারি মালিকানাধীন রেল কোম্পানি। ভারতীয় রেল দেশের রেল পরিবহণ ব্যবস্থার একচেটিয়া অধিকার সম্পন্ন। এটি বছরে প্রায় ৫০০ কেটি যাত্রী এবং ৩৫০০ লক্ষ টন মাল বহন করে এবং এটি পৃথিবীর একটি অন্যতম বৃহত্তম এবং ব্যস্ততম রেল নেটওয়ার্ক। ১৬ লক্ষেরও বেশি কর্মচারী সহ ভারতীয় রেল পৃথিবীর বৃহত্তম বাণিজ্যিক নিয়োগকারী কোম্পানি।
ভারতীয় রেল দেশের দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থ বরাবর পার হয়। এর গমনপথের মোট দৈর্ঘ্য ৬৩,৯৪০ কিমি (৩৯,২৩০ মাইল)। ২০০৫ সালের হিসেব অনুযায়ী, ভারতীয় রেলের ২১৬,৭১৭টি মালবাহী বগি, ৩৯,৯৩৬টি কামরা এবং ৭,৩৩৯টি রেল ইজ্ঞিন রয়েছে। এটি প্রতিদিন ৮০০২টি যাত্রীবাহী ট্রেন সহ মোট প্রায় ১৪২৪৪টি ট্রেন চালায়।
ভারতে প্রথমবার রেলওয়ে উপস্থাপন করা হয় ১৮৫৩ সালে। স্বাধীনতা লাভের বছর ১৯৪৭ সালে, ভারতে ৪২টি রেল সিস্টেম ছিল। ১৯৫১ সালে তাদেরকে একটি একক জাতীয় সম্পত্তিতে পরিণত করা হয়। এর ফলে এটি পৃথিবীর একটি বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্কে পরিণত হয়। ভারতীয় রেল দুরপাল্লা এবং শহরতলি উভয় ধরনের রেল সিস্টেম পরিচালনা করে।
[সম্পাদনা] ইতিহাস
ভারতে একটি রেল ব্যবস্থার জন্য প্রথম পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় ১৮৩২ সালে কিন্তু তারপর এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আর কোনও ধাপ গ্রহণ করা হয়নি। ১৮৪৪ সালে, ভারতের গভর্ণর জেনারেল লর্ড হার্ডিং ভারতে একটি রেল ব্যবস্থা নির্মাণ করতে ব্যক্তিগত বিনিয়োগ অনুমোদন করে। দুটি নতুন রেল কোম্পানি তৈরি করা হয় এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে তাদের সহায়তা করতে বলা হয়। যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ পরবর্তী কয়েক বছরের মধ্যে রেল ব্যবস্থার দ্রুত প্রসারণ ঘটায়। ভারতে প্রথম ট্রেন চলে ১৮৫১ সালের ২২শে ডিসেম্বর এবং এটি রুরকিতে নির্মাণ সামগ্রীর বহনের জন্য ব্যবহার করা হয়। তার প্রায় দেড় বছর পরে ১৮৫৩ সালের ১৬ই এপ্রিল, প্রথম যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা বোরি বুন্দর, বোম্বে এবং থানের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। ৩৪ কিমির (২১ মাইল) এই রেলপথ ভারতে রেল ব্যবস্থার আগমনবার্তা ঘোষণা করে।
ব্রিটিশ সরকার একটি কর্মপরিকল্পনার অধীনে ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারীদের দ্বারা সমর্থিত নতুন রেল কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করে যে অপারেশনের প্রাথমিক বছরগুলোতে পাঁচ শতাংশ হারে একটি বার্ষিক আয়ের নিশ্চয়তা প্রদান করা হবে। স্থাপন করা শেষ হলে, কোম্পানি সরকারের কাছে স্থানান্তর করা হবে কিন্তু মূল কোম্পানি রেলের ক্রিয়াকলাপ সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে। ১৮৮০ সালের মধ্যে এই রেলপথের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ১৪,৫০০ কিমি (৯,০০০ মাইল), মূলত তিনটি প্রধান বন্দর নগরী বোম্বে, মাদ্রাজ এবং কলকাতা থেকে দেশের ভিতরের দিকে বিভিন্নদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ১৮৯৫ সালের মধ্যে, ভারতে রেল ইজ্ঞিন নির্মাণ শুরু হয় এবং ১৮৯৬ সালে উগাণ্ডা রেলওয়ে নির্মাণে সাহায্য করতে প্রকৌশলী এবং রেল ইজ্ঞিন পাঠানো হয়।
শীঘ্রই তখনকার বিভিন্ন স্বাধীন রাজ্যগুলো তাদের নিজের রেল ব্যবস্থা নির্মাণ শুরু করে এবং রেল ব্যবস্থা ঐ সকল অঞ্চলে প্রসারিত হয় যা অধুনা অসম, রাজস্থান এবং অন্ধ্র প্রদেশের রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। ১৯০১ সালে একটি রেল বোর্ড গঠন করা হয় কিন্তু সিদ্ধান্তগ্রহণ ক্ষমতা ভাইসরয় লর্ড কার্জনের হাতে বজায় রাখা হয়। রেল বোর্ডটি বাণিজ্য এবং শিল্প বিভাগের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হত এবং এর তিনজন সদস্য ছিল: সভাপতি হিসেবে একজন সরকারি রেল আধিকারিক, ইংল্যান্ড থেকে একজন রেলওয়ে ম্যানেজার এবং রেলওয়ে কোম্পানির একজন এজেন্ট। ভারতীয় রেলের ইতিহাসে এই প্রথমবার রেলওয়ে যথেষ্ট পরিমাণে লাভ করতে শুরু করে। ১৯০৭ সালের মধ্যে প্রায় সমস্ত রেল কোম্পানিগুলোকে সরকার অধিগ্রহণ করে।