মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ | |
---|---|
কলেজ মনোগ্রাম | |
পরিচিতি | মির্জাপুরিয়ান |
প্রতিষ্ঠা | নভেম্বর ২৯,১৯৬৩ মোমেনশাহী জেলার মির্জাপুরে |
প্রথম শিক্ষাবর্ষ | ১৯৬৫ |
অবস্থান | টাঙ্গাইল শহর থেকে ৪৮ কি.মি. দূরত্বে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে ইউনিয়ন-গোড়াই উপজেলা-মির্জাপুর জেলা-টাঙ্গাইল বাংলাদেশ |
কলেজ নীতি | বিদ্যাই বল |
কলেজ রং | মেরুন |
আয়তন | ৯৫ একর |
হাউস সংখ্যা | ৩ |
নজরুল হাউস | |
নামকরণ | কাজী নজরুল ইসলাম |
প্রতিষ্ঠা | ১৯৬৬ |
নীতি | চির উন্নত মম শির |
প্রতীক | সিংহ |
রং | সবুজ |
সোহরাওয়ার্দি হাউস | |
নামকরণ | হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দি |
প্রতিষ্ঠা | ১৯৬৪ |
নীতি | এলাম দেখলাম জয় করলাম |
প্রতীক | ঈগল |
রং | লাল |
ফজলুল হক হাউস | |
নামকরণ | এ কে ফজলুল হক |
প্রতিষ্ঠা | ১৯৬৪ |
নীতি | সন্ধান সংগ্রাম বিজয় |
প্রতীক | বাঘ |
রং | নীল |
মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ (Mirzapur Cadet College) বাংলাদেশের তৃতীয় ক্যাডেট কলেজ। অন্যান্য ক্যাডেট কলেজের মতই এতেও জাতীয় পাঠ্যক্রম বাস্তবায়নের পাশাপাশি ক্যাডেটদের শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, চারিত্রিক, সাংস্কৃতিক ও নেতৃত্বের গুণাবলী বিকাশের লক্ষ্যে শিক্ষা সম্পূরক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এর পাশাপাশি এ ক্যাডেট কলেজটি শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ সাফল্য লাভ করেছে। মূলত ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় এতে প্রতিযোগিতাও তুলনামুলকভাবে বেশী এবং বোর্ড পরীক্ষায় সাফল্যও প্রশংসনীয়।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] অবস্থান ও প্রতিবেশ
মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ ৯০o৯' পূর্ব দ্রাঘিমারেখা এবং ২৪o৫.৩' উত্তর অক্ষরেখা বরাবর অবস্থিত। এর উত্তরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক এবং তিনদিকে রাজাবাড়ি গ্রাম অবস্থিত। এর পূর্ব দিয়ে বংশী নদীর একটি ছোট শাখা চলে গেছে । আর দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিয়ে চলে গেছে বারিন্দা নদী। পশ্চিম পাশ দিয়ে আবার ফুটজানি নদী এসে বারিন্দা নদীর সাথে মিশেছে। কলেজ হতে মির্জাপুর সদর থানার দূরত্ব প্রায় ৮ কি. মি.।
[সম্পাদনা] ইতিহাস
চট্টগ্রাম জেলায় ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ ও খুলনা বিভাগে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠিত হবার পরপরই মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজ (মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের পূর্বতন নাম) প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা গৃহীত হয়। অন্য ক্যডেট কলেজগুলোর মত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জন্য যোগ্য কর্মকর্তা তৈরি করাই ছিল এ কলেজ প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য।
[সম্পাদনা] পাকিস্তান আমল
- তদানিন্তন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান এ ক্যাডেট কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। তার হাতেই তদানিন্তন ময়মনসিংহ জেলার মির্জাপুরের গড়াই নামক স্থানে কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। দিনটি ছিল ১৯৬৩ সালের ২৯ নভেম্বর। কলেজের মূল শিক্ষাভবনের প্রধাণ সিঁড়ি দিয়ে উঠার পথে ভিত্তিপ্রস্তরটি এখনও চোখে পরে।
- তার পর থেকে কলেজ পুরোদমে চালু করার সবরকম আয়োজন চলতে থাকে। কিন্তু তা মোটেই সহজ ছিলনা। কারণ পুরো কলেজ এলাকাটি ছিল অরণ্যবেষ্টিত এবং বন্ধুর। কলেজের পাশে অবস্থিত রাজাবাড়ি গ্রামটি তখনও পুরো বিকশিত হয়নি। মোটামুটি একটি বন্ধুর বিরানভূমিকে কেটেছেটে সমান করা হয় এবং কলেজের পাশে বড় ধরণের একটি খাল তৈরি হয়ে যায়। ৯৫ একর এলাকা নিয়ে গড়ে উঠে মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজ। মেজর জেনারেল ফজলে মুকিম খান কলেজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় ১৯৬৫ সালের ৯ জানুয়ারি তারিখে। এ দিনটিকে কলেজের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী হিসেবে পালন করা হয়। কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ হিসেবে জনাব এম ডব্লিউ পিট কে নিয়োগ দেয়া হয়।
- ১৯৬৫ সালেই কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে একসাথে ৪ টি ইনটেক (ব্যাচ) ভর্তি করা হয়। তখন ক্যাডেটদের থাকার জন্য ২ টি হাউস ছিল। হাউসগুলোর নামও বর্তমানের মত ছিলনা। বর্তমান ফজলুল হক হাউসের নাম ছিল জিন্নাহ হাউস আর সোহরাওয়ার্দি হাউসের নাম ছিল আইয়ুব হাউস। বর্তমান নজরুল হাউস তখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি। পরবর্তী বছর যখন নতুন ইনটেক নেয়া হয় তখন তাদের থাকার ব্যবস্থা করার জন্য ~ হাউস তৈরি করা হয় যার বর্তমান নাম নজরুল হাউস।
- কলেজটি প্রথম বছরই ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। দেশে তখন ভাল স্কুল কলেজের সংখ্যা ছিল নিতান্তই কম। তার উপর পাকিস্তানী শোষনের কবলে পরে দেশের মূল সাংগঠনিক কাঠামো নাজুক অবস্থায় পতিত হয়ে গিয়েছিল। এমতাবস্থায় একমাত্র সেনাবাহিনী নিয়ণ্ত্রিত হবার কারণেই ক্যাডেট কলেজগুলোতে সবকিছুর ব্যবস্থাপনা ছিল চমৎকার। মূলত এতেও পাকিস্তান সরকারের স্বার্থ ছিল। আইয়ুব খান ভেবেছিলেন এতে পূর্ব পাকিস্তান থেকে পাকিস্তান সরকারের অনুগত সামরিক কর্মকর্তা পাওয়া যাবে। এতে একদিকে যেমন সামরিক বৈষম্য নেই বলে বিবৃতি দেয়া যাবে আরেকদিকে তেমনি পাকিস্তানের ভিত পাকাপোক্ত করা যাবে। তাই ক্যাডেট কলেজগুলোকে সর্ববিষয়ে আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ নেয়া হয়। আর তখন ক্যাডেট কলেজগুলোতে পড়াশোনার খরচ ছিলনা বললেই চলে। সমগ্র বাংলাদেশ থেকে কেবল মেধা ও ধৈর্যের উপর ভিত্তি করেই নির্বাচিত করা হত। কোন খরচ না থাকার কারণে গরীব থেকে শুরু করে সর্বস্তরের ছাত্ররাই পড়াশোনার সুযোগ পেত। কেবল মেধা থাকলেই হল। তার উপর এটি ছিল রাজধানী ঢাকার সবচেয়ে নিকটবর্তী ক্যাডেট কলেজ। এসব কারণেই এর জনপ্রিয়তা এত দ্রুত ছড়িয়ে পরে।
[সম্পাদনা] স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়
- কলেজ যখন পুরোদমে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে তখনই শুরু হয় স্বাধীনতা যুদ্ধ। দুঃখজনক হলেও সত্য যে ১৯৭১ সালে কলেজের অধ্যক্ষ এবং এডজুটেন্ট দুজনই ছিলেন পাকিস্তানী। রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে যেখানে এডজুটেন্টই যুদ্ধে যেতে ক্যাডেটদের উৎসাহিত করেছেন সেখানে মোমেনশাহীর অবস্থা ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। মেজর কাইয়্যানি ছিলেন এডজুটেন্ট। এই প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বেশ কিছু ক্যাডেট যুদ্ধে অংশগ্রহন করে। শহীদ খোরশেদ তারই উদাহরণ। এছাড়াও আরও কয়েকজন যুদ্ধে অংশ নেন এবং তাদের মধ্যে কয়েকজন আবার যুদ্ধ শেষে কলেজে ফিরে আসেন।
[সম্পাদনা] বাংলাদেশ আমল
[সম্পাদনা] উৎস
- প্রসপেক্টাস - মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ
- বার্ষিকী ২০০২ - মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ
- বার্ষিকী ২০০৪ - মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ
- প্রসপেক্টাস - ক্যাডেট কলেজ
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলীলপত্র - তথ্য মণ্ত্রনালয়, বাংলাদেশ সরকার
[সম্পাদনা] আরও দেখুন
- ক্যাডেট কলেজ
- কুমিল্লা ক্যিডেট কলেজ
- বাংলাদেশ সেনা বাহিনী
- মির্জাপুর এক্স ক্যাডেট্স এসোসিয়েশন
[সম্পাদনা] বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা] চিত্র
[সম্পাদনা] আরও দেখুন
বাংলাদেশের ক্যাডেট কলেজসমূহ - সম্পাদনা |
---|
ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ • মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ • ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ • রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ • সিলেট ক্যাডেট কলেজ • রংপুর ক্যাডেট কলেজ • পাবনা ক্যাডেট কলেজ • বরিশাল ক্যাডেট কলেজ • ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ • কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ • জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজ • ফেনী গার্লস ক্যাডেট কলেজ |