হাতি
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বৃহত্তম স্থলচর স্তন্যপায়ী। প্রোবোসিডিয়া (শূণ্ডধারী) বর্গের (order proboscidea) একমাত্র জীবিত বংশধর (জাতভাই ছিল ম্যামথ ইত্যাদি যারা বিলুপ্ত)। শুঁড়কে হাত(হস্ত/কর)-এর মত ব্যবহার করতে পারার জন্য এর নাম "হাতি"("হস্তী"/"করী")।
তিনটি প্রজাতি: একটি এশীয় (এলিফাস ম্যাক্সিমাস) ও দুটি আফ্রিকান (লক্সোডন্টা আফ্রিকানা, লক্সডন্টা সাইক্লোটিস)। প্রাপ্তবয়স্ক (এশীয় হলে শুধু পুরুষ) হাতির উপরের ইনসিসর দাঁত দুটি লম্বা হয়ে গজদন্ত তৈরী করে।
হাতি দলবদ্ধ জন্তু। দলপতি হয় সবথেকে শক্তিশালী দাঁতাল। দলের কেন্দ্রে বাচ্চাদের ঘিরে থাকে মা-দিদিমারা। বাচ্চারা বড় হলে দলের বাইরের সারীতে স্থান নেয়। দলছুটও হতে থাকে। পরিণত দাঁতালরা নিজেদের দল গঠনের চেষ্টা করে। তরণ দাঁতালরা "মস্ত" হবার মরসুমে কানের সামনে অবস্থিত "মস্তগ্রন্থি"র অত্যধিক ক্ষরণে মত্ত বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং দলপতি বা অন্য দাঁতাল বা যেকোন শাসনকারীকে(যেমন মাহুত) আক্রমণ করে। তখন দলপতি লড়াই বা আত্মগোপনের চেষ্টা করতে পারে। গজদন্তহীন পুরুষ হাতিদের বলে মাকনা। এরা মাদী হাতিদের মধ্য লুকিয়ে থাকতে পারে, এবং দাঁতালদের অজ্ঞাতসারে বংশবিস্তার করতে পারে।
হাতির গর্ভকাল প্রাণীরাজ্যে দীর্ঘতম- প্রায় দুবছর (২২ মাস)। গল্পে একশ বছর বাঁচে বলা হলেও হাতিরা আসলে ৬০-৭০ বছরের বেশী বাঁচেনা। কারণ এদের জীবদ্দশায় ছয়বার (আমাদের মত দুবার নয়) কষদাঁত বের হয়, আবার চিবিয়ে চিবিয়ে ক্ষয়ে যায়- কষদাঁতের শেষ সেট ষষ্ঠম দশকে গজায়, যা ক্ষয়ে যাবার পর অনাহারে মৃত্যু অনিবার্য।
বিজ্ঞানদের ধারণা অগভীর জলে স্নরকল করে নিশ্বাস নিতে সুবিধা হওয়ায় প্রোবোসিডিয়াদের জলচর পূর্বপুরুষদের নাক লম্বা হয়ে শুঁড়ে (proboscis) বিবর্তিত হয়েছিল[1]। এদের নিকটতম স্তন্যপায়ী আত্মীয়রা হল ডুগং, মানাটি, সমুদ্র-গাভী (sea cow) ইত্যাদি যারা জলচর সিরেনিয়া বর্গের অন্তরভুক্ত। এদের শরীরবৃত্তীয় অনন্যতা হল যে জন্মের পরে এদের প্লুরার (ফুসফুসের আবরণ) শূন্যস্থান সংযজক কলা দ্বারা ভরাট হয়ে যায় (সম্ভবতঃ লম্বা শূঁড়ের ডেড স্পেস সমেত হাওয়া টানবার জন্যে এত বেশী ঋণাত্মক বায়ুচাপ করতে হয় যে প্লুরা গহ্ভর শূন্য থাকলে রক্তবাহ ফেটে তার মধ্যে রক্তপাতের সম্ভাবনা থাকত।[১]
[সম্পাদনা] তথ্যসূত্র
- ↑ John B. West Why Doesn't the Elephant Have a Pleural Space? News Physiol Sci 17: 47-50, 2002. http://physiologyonline.physiology.org/cgi/content/full/17/2/47