স্পুতনিক প্রকল্প
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্পুতনিক প্রকল্প তদানিন্তন সোভিয়েত ইউনিয়ন এর মহাকাশ অভিযানের একটি পর্যায়, যার অধীনে একাধিক কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করা হয়। স্পুতনিক শব্দটি রুশ ভাষার ("Спутник") এর অর্থ "সহ অভিযাত্রী", অবশ্য রুশ ভাষায় এর দ্বারা উপগ্রহও বোঝানো হয়ে থাকে। রুশ ভাষায় এর উচ্চারণ [ˈsputnʲɪk], কিন্তু ইংরেজিতে উচ্চারন করা হয় সাধারণত /ˈspʊtnɪk/.
স্পুতনিক ১ বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ যা ১৯৫৭ খ্রীস্টাব্দের অক্টোবর ৪ তারিখে উৎক্ষেপণ করা হয়।
স্পুতনিক ২ উৎক্ষেপিত হয় একই বছরের নভেম্বর ৩ তারিখে। এতে মহাকাশের প্রথম প্রাণী, লাইকা নামের একটি কুকুরকে পাঠানো হয়। অবশ্য ফেরত আসার কোন ব্যবস্থা রাখা হয় নাই, ফলে লাইকাই মহাকাশে মৃত্যুবরণকারী প্রথম পার্থিব প্রাণী।
১৯৫৮ সালের ফেব্রুয়ারি ৩ তারিখে স্পুতনিক ৩ উৎক্ষেপণ করার চেষ্টা সফল হয় নাই, সেটা সফল ভাবে মহাকাশে প্রেরিত হয় মে ১৫ তারিখে। এতে করে ভূতাত্ত্বিক গবেষণার যন্ত্রপাতি পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু টেপ রেকর্ডার বিকল হয়ে যাওয়াতে এটি কাজ করেনি।
দুই বছর পর, ১৯৬০ সালের মে ১৫ তারিখে স্পুতনিক ৪ প্রেরণ করা হয়।
স্পুতনিক ৫ এ করে বেল্কা ও স্ত্রেইকা নামের দুইটি কুকুর, ৪০টি ইঁদুর, দুইটি ছূঁচো, এবং বিভিন্ন ধরণের গাছপালা ১৯৬০ সালের আগস্ট ১৯ তারিখে মহাকাশে পাঠানো হয়। পরদিন এটি পৃথিবীতে নিরাপদ ভাবে ফেরত আসে, এতে করে পাঠানো প্রাণীগুলো সবই সুস্থ ছিল।
সব স্পুতনিক উপগ্রহই আর-৭ ধরণের রকেটে করে পাঠানো হয়েছিল। এই রকেট অবশ্য যুদ্ধাস্ত্র হিসাবে পারমাণবিক বোমা বহনের জন্য তৈরী করা হয়েছিল।
স্পুতনিক ১ সারা বিশ্বকে চমক লাগিয়ে দিয়েছিল। সমসাময়িক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যানগার্ড মহাকাশ প্রকল্প ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়, যার দরুণ সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিদ্বন্দী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মহাকাশ দৌড়ে পিছিয়ে পড়ে। পাল্লা দেয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বেশ কিছু উপগ্রহ প্রেরণ করে, যার মধ্যে রয়েছে এক্সপ্লোরার ১, স্কোর প্রকল্প, কুরিয়ার ১বি, ইত্যাদি। স্পুতনিক উৎক্ষেপনের সাফল্যকে টেক্কা দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাসা প্রতিষ্ঠা করে। এছাড়া মার্কিন সরকার বিজ্ঞান গবেষণার খাতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে।
[সম্পাদনা] দেখুন
- সের্গেই কোরেলভ, স্পুতনিকের প্রধান নির্মাতা