প্রফুল্ল চাকী
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
প্রফুল্ল চাকী (ডিসেম্বর ১০, ১৮৮৮ - ১৯০৮) ভারত উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সর্বকনিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। পূর্ববঙ্গে জন্ম নেয়া এই বাঙালী বিপ্লবী তৎকালীন ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন, এবং জীবন বিসর্জন করেন।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] প্রাথমিক জীবন
প্রফুল্ল চাকীর জন্ম ১৮৮৮ খ্রীস্টাব্দের ১০ ডিসেম্বর বগুড়া জেলার বিহার গ্রামে (বর্তমানে যা বাংলাদেশের অন্তর্গত)। নবম শ্রেনীতে পড়ার সময় পূর্ব বঙ্গ সরকারের কারলিসল সার্কুলারের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহনের দায়ে তাঁকে রংপুর জেলা স্কুল হতে বহিস্কার করা হয়। তিনি এর পর রংপুর ন্যাশনাল স্কুলে পড়াশোনা করেন। সেখানে পড়ার সময় জীতেন্দ্রনারায়ণ রায়, অবিনাশ চক্রবর্তী, ঈশান চন্দ্র চক্রবর্তী সহ অন্যান্য বিপ্লবীর সাথে তাঁর যোগাযোগ হয়, এবং তিনি বিপ্লবী ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত হন।
[সম্পাদনা] বিপ্লবী কর্মকান্ড
বারীন ঘোষ প্রফুল্ল চাকীকে কলকাতায় নিয়ে আসেন। যেখানে প্রফুল্ল যুগান্তর দলে যোগ দেন। তাঁর প্রথম দায়িত্ব ছিল পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশের প্রথম লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্যার জোসেফ ব্যামফিল্ড ফুলারকে (১৮৫৪-১৯৩৫) হত্যা করা। কিন্তু এই পরিকল্পনা সফল হয় নাই। এর পর প্রফুল্ল চাকী ক্ষুদিরাম বসুর সাথে কলকাতা প্রেসিডেন্সী ও পরে বিহারের মুজাফফরাবাদের ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
[সম্পাদনা] মুজাফফরাবাদে অভিযান
ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল কিংসফোর্ডের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেন এবং তাকে ১৯০৮ খ্রীস্টাব্দের ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যা বেলায় হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। ইউরোপিয়ান ক্লাবের প্রবেশদ্বারে তাঁরা কিংসফোর্ডের ঘোড়ার গাড়ির জন্য ওঁত পেতে থাকেন। একটি গাড়ি আসতে দেখে তাঁরা বোমা নিক্ষেপ করেন। দুর্ভাগ্যক্রমে ঐ গাড়িতে কিংসফোর্ড ছিলেন না, বরং দুইজন ব্রিটিশ মহিলা মারা যান। প্রফুল্ল ও ক্ষুদিরাম তৎক্ষনাৎ ঐ এলাকা ত্যাগ করেন।
[সম্পাদনা] পলায়ন ও মৃত্যু
প্রফুল্ল ও ক্ষুদিরাম আলাদা পথে পালাবার সিদ্ধান্ত নেন। প্রফুল্ল ছদ্মবেশে ট্রেনে করে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হন। ট্রেনে নন্দলাল ব্যানার্জী নামে এক পুলিশ দারোগা সমস্তিপুর রেল স্টেশনের কাছে প্রফুল্লকে সন্দেহ করেন। ধাওয়ার সম্মুখীন হয়ে প্রফুল্লে পালাবার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোণঠাসা হয়ে পড়ে প্রফুল্ল ধরা দেওয়ার বদলে আত্মাহুতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি নিজের মাথায় পিস্তল দিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেন। ক্ষুদিরাম পরবর্তীতে ধরা পড়েন এবং তাঁকে ফাঁসী দেওয়া হয়।