ভিয়েতনাম
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
|
|||||
নীতি বাক্য: দোক লাপ, তু য, হাং ফুক স্বাধীনতা, মুক্তি, সুখ |
|||||
জাতীয় সঙ্গীত: তিয়েন কোয়ান কা | |||||
![]() |
|||||
রাজধানী | হ্যানয় | ||||
বড় শহর | হো চি মিং সিটি | ||||
রাষ্ট্রভাষা | ভিয়েতনামি ভাষা | ||||
সরকার
কমুনিস্ট দলের সাধারণ সম্পাদক
রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদের সভাপতি |
কমুনিস্ট রাষ্ট্র নোং দুক মাং ঙুইয়েন মিং ট্রিয়েত ঙুইয়েন তান যুং ঙুইয়েন ফু ট্রং |
||||
স্বাধীন ফ্রান্স হতে স্বাধীন ঘোষণা স্বীকৃত |
সেপ্টেম্বর ২, ১৯৪৫ ১৯৫৪ |
||||
ভূখন্ড - মোট - পানি (%) |
৩৩১,৬৮৯ বর্গকিলোমিটার; (৬৫ তম) ১২৮,০৬৫ বর্গ মাইল ১.৩% |
||||
জনসংখ্যা - জুলাই ২০০৫ হিসাবে - জনসংখ্যার ঘনত্ত্ব |
৮৪,২৩৮,০০০ (১২ তম)
|
||||
জিডিপি (পিপিপি) - মোট - প্রতি এককে |
২০০৫ $২৫১.৮ বিলিয়ন (৩৬ তম) $৩,০০০ (১২৩ তম) |
||||
মানব উন্নয়ন সূচক (২০০৩) | .৭০৪ (১০৮ তম) – medium | ||||
মুদ্রা | দোং (ভিএনডি ) |
||||
সময় স্থান | (ইউটিসি+৭) | ||||
ইন্টারনেট ডোমেইন | .ভিএন | ||||
দেশের কোড | +৮৪ |
||||
জাতীয়তা | ভিয়েতনামি
|
ভিয়েতনাম দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম হ্যানয়। সরকারীভাবে এই দেশের নাম সমাজতান্ত্রিক ভিয়েতনাম প্রজাতন্ত্র। এটি ইন্দোচায়না এলাকার পূর্বাংশে অবস্থিত। এর সীমানায় রয়েছে গণচীন, লাওস, কম্বোডিয়া, ও দক্ষিণ চীন সাগর। ভিয়েতনাম এশিয়া মহাদেশের মূল ভূখন্ডে অবস্থিত দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা জনবহুল দেশ।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] ইতিহাস
[সম্পাদনা] চীনা আধিপত্য ও প্রতিরোধ
শত শত বছর ধরে চলা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনামি জাতির জন্ম৷ খ্রীস্টপূর্ব ২২১ সালে চীনের ছিন রাজবংশ এই এলাকা দখল করে। ২১০ খ্রীস্টপূর্বাব্দে ছিন রাজবংশের পতনের পর তাদের দক্ষিণাঞ্চলের সেনাপতি চাও থুও (ভিয়েতনামে ট্রিয়েউ দা নামে পরিচিত) সাম্রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলের কিছু এলাকা নিয়ে নাম ভিয়েত নামক নতুন রাজ্য গঠন করেন। পরবর্তীতে বর্তমান ভিয়েতনামের আরো এলাকা এই রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১১১ খ্রীস্টপূর্বাব্দে নাম ভিয়েত চীনা হান রাজবংশের দখলে চলে যায়। চৈনিক আধিপত্যের বিপক্ষে ভিয়েতনামিদের প্রতিরোধ বিক্ষিপ্তভাবে চলতে থাকে। অবশেষে ঙো কুইয়েনের নেতৃত্বে ৯৩৯ খ্রীস্টাব্দে তারা চীনাদের হটিয়ে দিতে সক্ষম হয়। নতুন রাজবংশের শুরু হয়। তবে অল্পদিনেই তাতে ভাঙ্গন ধরে। এরপর কিছুদিন গৃহযুদ্ধের পর ১০১০ সালে লি রাজবংশ প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজ্যের নাম হয় দাই ভিয়েত। ১২২৫ সাল থেকে শুরু হয় ট্রান রাজবংশের শাসন। এই পুরো সময়টাতে তাদেরকে চীনের রাজাদের সাথে লড়তে হয়েছে। ত্রয়োদশ শতকে মঙ্গোলরা চীন দখল করে ইউয়ান রাজবংশের সূচনা করে, তারা ভিয়েতনামেও আক্রমণ চালায়, তবে সফল হয়নি। এদিকে দক্ষিণে অবস্থিত চাম্পা রাজ্য দখল করায় ভিয়েতনাম রাজ্যের পরিধি আরো বৃদ্ধি পায়। ১৪০৭ সালে চীনা মিং রাজবংশ ভিয়েতনাম দখল করে। তবে দুই দশকের মাঝে ভিয়েতনামিরা স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করে। শুরু হয় লে রাজবংশের শাসন। এটি প্রায় তিন শতক শাসন করে। তবে সপ্তদশ শতকে রাজ্যটি প্রশাসনিকভাবে কার্যত দুই ভাগ হয়ে যায়। এটি ইউরোপীয় শক্তির আধিপত্যবিস্তারকে সহজ করে দেয়।
[সম্পাদনা] ফ্রান্সের উপনিবেশ
১৮৬০ সালে ইন্দোচায়না দখল করার পর থেকে ভিয়েতনাম দখল করার চেষ্টা চালাতে থাকে ফ্রান্স৷ এজন্য তাদের ৩০ বছর অপেক্ষা করতে হয়৷ ফ্রান্সের শাসন আমলে ১৯০০ সালের কাছাকাছি সময়ে ভিয়েতনাম উত্তরে টঙ্কিন, মধ্যাঞ্চলে আন্নাম ও দক্ষিণে কোচিন চায়না নামে তিন ভাগে ভেঙে যায়৷ এরপর আবার ধীরে ধীরে ভিয়েতনামিরা সংগঠিত হতে থাকে৷ ১৯২৯ সালে ভিয়েতনামে বেশ কিছু মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী পার্টির উদ্ভব হয়৷ পরের বছরই তারা হো চি মিঙের নেতৃত্বে ইন্দোচায়না কমিউনিস্ট পার্টি নামে একত্রিত হয়৷ পরবর্তীকালে দলটি তিন ভাগে ভেঙে আলাদা আলাদাভাবে লাওস, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামে কাজ চালিয়ে যেতে থাকে৷ ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত দলটি ভিয়েতনামে শ্রমিক পার্টি নামে পরিচিত হলেও পরবর্তীকালে কমিউনিস্ট পার্টি অফ ভিয়েতনাম (সিপিভি) নাম ধারণ করে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভিয়েতনামি কমিউনিস্টরা জাপানিদের প্রতিরোধ করতে মিত্রশক্তিকে সহযোগিতা করে৷ ১৯৪১ সালে হো চি মিং ভিয়েত মিং বা স্বাধীনতা লীগ প্রতিষ্ঠা করেন৷ লক্ষ্য করুন ভিয়েতনাম ও ভিয়েত মিঙের অর্থ আলাদা৷ বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর দেশটিতে ভিয়েত মিং ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে৷ তাদের একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী ছিল৷ ১৯৪৫ সালের আগস্টে ভিয়েতনামে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়৷ এর দুই সপ্তাহ পর হ্যানয় দখলকারী বিদ্রোহীরা ভিয়েতনামের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রচার করে৷ পাশাপাশি তারা ভিয়েতনামকে প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করে৷ রাজা বাও দাই পদত্যাগ করতে বাধ্য হন৷ তাকে নতুন শাসন ব্যবস্থার উপদেষ্টার পদ গ্রহণের প্রস্তাব দেয়া হয়৷ ১৯৪৬ সালের মার্চে ভিয়েতনাম সরকারকে ফ্রান্স স্বীকৃতি দেয় এবং ফরাসি ইউনিয়নের অধীনে ভিয়েতনামকে মুক্ত দেশ হিসেবে মেনে নেয়৷ আর জুনে ফ্রান্স সাবেক রাজা বাও দাইকে রাষ্ট্রের প্রধান ঘোষণা করে৷ ভিয়েত মিং তখন গেরিলা যুদ্ধ শুরু করে৷ দীর্ঘ নয় বছর যুদ্ধ করার পর ১৯৫৪ সালে দিয়েন বিয়েন ফু সামরিক ঘাঁটিতে ফরাসি বাহিনীকে পরাজিত করে ভিয়েত মিং চূড়ান্তভাবে বিজয়ী হয়৷
[সম্পাদনা] ভিয়েতনাম যুদ্ধ
১৯৬০ সালে ডেমক্রেটিক, সোশ্যালিস্ট ও মার্কসবাদীরা আইনজীবী নুয়েন হু তো-এর নেতৃত্বে ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্টে (এনএলএফ) একত্রিত হয়৷ সে সময়ই সায়গনের সামরিক সরকার ও আমেরিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়৷ সায়গনে প্রথম সেনা ও উপদেষ্টা আমেরিকাই পাঠিয়েছিল৷ ১৯৬৯ সালে সায়গনে আমেরিকার ৫ লাখ ৮০ হাজার সেনা ছিল৷ ভিয়েতনামে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চেয়েও বেশি বোমা ফেলা হয়৷ আমেরিকা সেখানে পরীক্ষামূলক রাসায়নিক বোমাও ফেলেছিল৷ ১৯৬৯ সালেই হো চি মিন মারা যান৷ ১৫ বছরব্যাপী যুদ্ধে আমেরিকা ১৫০ বিলিয়ন ডলার খরচ করে৷ আর ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলের ৭০ ভাগ গ্রাম একদম ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধে আমেরিকার পরাজয় হয়৷ তড়িঘড়ি করে আমেরিকান সৈন্যদের ভিয়েতনাম ছেড়ে যেতে হয়৷ ১৯৭৫ সালের এপ্রিলে এনএলএফ (ভিয়েতকং) সায়গনের নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করে৷ আর এর নাম বদলে তাদের প্রয়াত নেতার নাম অনুসারে হো চি মিন সিটি রাখা হয়৷ ১৯৭৬ সালের ২ জুলাই সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক অফ ভিয়েতনাম নামে পুরো অঞ্চলটির পুনএকত্রীকরণ ঘটে৷
[সম্পাদনা] একত্রীকরণ পরবর্তী ভিয়েতনাম
শান্তি ভিয়েতনামে দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়নি৷ ১৯৭৯ সালের জানুয়ারিতে তারা পল পটের কাম্বোডিয়া সরকারের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে৷ পরবর্তীকালে পল পটকে সরিয়ে দিয়ে ভিয়েতনামপন্থী হেঙ্গ সামরিন কাম্বোডিয়ার ক্ষমতা দখল করলে চায়নিজ জনগণকে ভিয়েতনামিকরণ ক্যামপেইনের হাত থেকে বাঁচাতে ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলে চায়না হামলা চালায়৷ আর ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগান ভিয়েতনামে সাহায্য প্রদানে জাতিসংঘকে বাধা দেন৷ ১৯৮৫ সালের পরে হ্যানয় কয়েকজন রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দেয়৷ পাশাপাশি আসিয়ান ও আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সবরকম প্রচেষ্টা চালাতে থাকে৷ ১৯৮৬ সালে সিপিভির সাধারণ সম্পাদক লি ডুয়ান মারা যান৷ ভিয়েতনাম কংগ্রেস নুয়েন ভ্যান লিন-কে নতুন সম্পাদক মনোনীত করে৷ আশির দশকে ইওরোপের রাজনৈতিক কালচারের পরিবর্তন শুরু হলে ভিয়েতনামেও তার ঢেউ লাগে৷ পরিণতিতে দেশটিতে বহুদলীয় সংসদীয় ব্যবস্থার দাবি উঠতে থাকে৷ ১৯৮৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে নন-কমিউনিস্ট প্রার্থীরাও অংশ নেন৷ সে বছরই হং কংয়ে আশ্রয় নেয়া হাজার হাজার ভিয়েতনামিজ উদ্বাস্তুকে বৃটেন বের করে দেয়৷ ১৯৯১ সালে সিপিভি সোশ্যালিজমের প্রতি তাদের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে৷ একই বছরেই সিপিভির নতুন সাধারণ সম্পাদক হন দু মুয়োই৷ সভিয়েট ইউনিয়নের পতনের পরও সিপিভি একদলীয় ব্যবস্থাকে ধরে রাখতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে৷ তবে শর্ত সাপেক্ষ বেসরকারি উদ্যোগ ও বৈদেশিক বিনিয়োগসহ সামগ্রিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় কিছু পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷ ১৯৯১ সালের অক্টোবরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে প্যারিসে এক চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে কাম্বোডিয়ার সঙ্গে ভিয়েতনামের চলমান অচলাবস্থার নিরসন হয়৷ চুক্তিটি চায়নার সঙ্গেও ভিয়েতনামের সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার পথে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করে৷ আর নভেম্বরে বৃটেন ৬৪ হাজার ভিয়েতনামিজ উদ্বাস্তুকে হং কংয়ের ক্যাম্পগুলোতে আবারো ফিরিয়ে নেয়৷ ১৯৯২ সালের নতুন সংবিধান স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও নির্বাচনে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দেয়৷ তারপরও জুলাই নির্বাচনে দাঁড়ানো ৯০ ভাগ প্রার্থীই ছিলেন সিপিভি সদস্য৷ আর সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী ভো ভ্যান কিয়েট-এর সহযোগী জেনারেল লি দুক আন প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার নেন৷ ১৯৯২ সালে বেসরকারিকরণ এবং বৈদেশিক বিনিয়োগের স্বাধীনতার কারণে ভিয়েতনামের জিডিপির প্রবৃদ্ধি এক লাফে বেড়ে দাঁড়ায় ৮.৩ ভাগে৷ সে সময় প্রচুর ধান উত্পাদনের কারণে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল দারুণভাবে লাভবান হতে থাকে৷ আর পঞ্চাশ লাখ জনঅধ্যুষিত হো চি মিন সিটি দেশের অর্থনৈতিক রাজধানীতে পরিণত হওয়ার পাশাপাশি দেশের উত্তরাঞ্চলের কাছে এক নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করে৷ নব্বই দশকের মধ্যভাগে বিশ্ব ব্যাংক ও এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে ভিয়েতনামের বেশির ভাগ এলাকায় টেলিযোগাযোগ, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বৈদ্যুতিক খাতের সংস্কার করা হয়৷ আর ১৯৯৫ সালে আমেরিকার সঙ্গে ভিয়েতনামের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়৷ ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বরে ট্রান দাক লুয়োং ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট এবং ফ্যান ভ্যান খাই প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন৷ আর ডিসেম্বরে সিপিভির শীর্ষ তিনটি পদে পরিবর্তন আনা হয়৷ ১৯৯৮ সালের এপ্রিলের অনাবৃষ্টিতে ভিয়েতনামের ২ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর চা বাগানের মধ্যে ৭ হাজার হেক্টর চা বাগান সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে যায়৷ এতে দেশটির রফতানি খাত বড় ধরনের ধাক্কা খায়৷ পাশাপাশি নানা আঞ্চলিক সমস্যার কারণে দেশটির অর্থনীতিতে মন্দাভাব দেখা দেয়৷ জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৮ ভাগ থেকে ৬ দশমিক ১ ভাগে নেমে আসে৷ বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণও ৭০ ভাগ কমে যায়৷ আর সেপ্টেম্বরে ভিয়েতনাম এশিয়া-প্যাসিফিক ইকনমিক কো-অপারেশন (এপেক)-এর পূর্ণ সদস্য পদ পায়৷ ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে আট বছর ধরে চলা দেন-দরবারের পর চায়নার সঙ্গে ভিয়েতনামের সীমান্ত-চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়৷ টাইফুন ও অতিবৃষ্টির কারণে ১৯৯৯ সালে ভিয়েতনামে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়৷ পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো দেশটির বনাঞ্চল নিির্বচারে উজাড় হয়ে যাওয়াকেই এর প্রধানতম কারণ বলে দাবি করে৷ সে সময় ভিয়েতনামের সর্বত্র দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়ে৷ এক পর্যায়ে সিপিভি সংশ্লিষ্ট তিনজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে৷ পরিস্থিতি এতোটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করে যে, ১৯৯৯ সালে সিপিভি দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী নো জুয়ান লক-এর পদত্যাগ দাবি করে৷ ২০০০ সালে সিপিভি পলিটব্যুরো স্বীকার করে নেয় যে, দলটির সদস্যরা নানাভাবে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে গেছে৷ আর এজন্য দলের পদাধিকারীরাও সমান দায়ী৷ দুর্নীতি কমাতে স্বায়ত্তশাসিত পর্যবেক্ষক কমিটি গঠন করার পাশাপাশি দলীয় নেতাদের সম্পত্তির বিবরণ দেয়ার নিয়ম বাধ্যতামূলক করা হয়৷ ২০০০ সালের নভেম্বরে ভিয়েতনাম সফরে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় দেশটিতে অবিস্ফোরিত বিস্ফোরকসমূহ ধ্বংস করার জন্য সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন৷ আর ২০০১ সালের এপ্রিলে সিপিভির নতুন সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন নোং দাক মান৷ ২০০২ সালের মে মাসে রাশিয়া ক্যাম রান উপসাগর থেকে তাদের নৌঘাঁটি প্রত্যাহার করে নেয়৷ আর জুলাইতে ট্রান দাক লুয়োং প্রেসিডেন্ট এবং ফ্যান ভ্যান খাই দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদে পুনির্নর্বাচিত হন৷ ২০০৩ সালের জুনে হো চিন মিন সিটির শীর্ষ ছয় অপরাধীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়৷ আর ২০০৪ সালে দেশটিতে বার্ড ফ্লু-এর ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়৷ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে ১৬ জন মারা যায়৷