এন্টিগুয়া ও বারবুডা
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] ইতিহাস
[সম্পাদনা] প্রাথমিক বসতি
এন্টিগুয়া ও বারবুডার প্রথম অধিবাসী ছিলো কিবোনি (Cibony) গোত্রীয় মানুষেরা। এরা প্রাচীন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের আরাওয়াক (Arawak) গোষ্ঠীর সাথে সম্পর্কিত ছিলো। এদের বসবাসের শুরু হয়েছিলো আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২৪০০ অব্দ থেকে। তবে ঐতিহাসিক ভিত্তি অনুসারে ৩৫ সাল থেকে ১১০০ সাল পর্যন্ত আরাওয়াকদের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। ১৪৯৩ সালে যখন ক্রিস্টোফার কলম্বাস এন্টিগুয়ায় যান তখন সেখানে ছিলো ক্যারিব (Carib) গোত্রের বসবাস। কলম্বাস তার দ্বিতীয় অভিযানের সময় এই দ্বীপে যান এবং এর নামকরণ করেন সান্তা মারিয়া ডি লা এন্টিগুয়া। এটি ছিলো স্পেনের সেভিলে অবস্থিত একটি চার্চের নাম। এই দ্বীপে তিনি বেশিদিন থাকেননি। এই ভ্রমণের পর থেকেই স্পেনীয় ও ফরাসিরা এখানে উপনিবেশ স্থাপনের জন্য যুদ্ধ শুরু করে এবং তাদের সাথে যুগপৎ যুদ্ধ হয় ক্যারিবদের।
[সম্পাদনা] উপনিবেশিক যুগ
১৬৩২ সালে এই দ্বীপে ইংরেজ উপনিবেশ স্থাপিত হয়। ১৯৮১ সালে এই অঞ্চল স্বাধীন হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এন্টিগুয়া এবং এর অধীনস্ত বারবুডা ও রোডান্ডা সহ অন্যান্য বেশ কিছু অঞ্চল ইংরেজদের অধিনেই থেকে যায়। অবশ্য ১৬৬৬ সালে অতি স্বল্প সময়ের জন্য এখানে ফরাসি আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। ১৬৭৪ সালে স্যার ক্রিস্টোফার কডরিংটন এই অঞ্চলে প্রথম ইক্ষু চাষ শুরু করেন। এই আধিপত্যের কারণেই বারবুডা অঞ্চলটি কডরিংটন পরিবারের কাছে ইজারা দেয়া হয়। উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে আবার এই অঞ্চল সরাসরি ব্রিটিশ রাজের অন্তর্ভুক্ত হয়। কডরিংটন পরিবারই বারবুডা অঞ্চলের জঙ্গলসমূহ পরিষ্কার করে তাকে ইক্ষু চাষের উপযুক্ত করে তোলে যার ফলে সেখানে ক্রিতদাসদের জন্য পৃথক প্রদেশ গড়ে উঠে। এন্টিগুয়ার জমি সাফ করার জন্যই সেখানে প্রচুর ক্রিতদাস নিয়োগ করা হয়েছিলো। আর এন্টিগুয়ার এই ক্রিতদাসরাই বারবুডায় আরাদা প্রদেশ গড়ে তোলে।
ইক্ষু চাষের উপযোগী উর্বর ভূমি ছাড়াও আরেকটি কারণে এন্টিগুয়ার সুখ্যাতি ছিলো। তা হলো এর গভীর প্রাকৃতিক পোতাশ্রয়সমূহ। দ্বীপটির দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত সেন্ট জন্স এবং ফ্যালমাউথ উপকূলে ছিলো পোতাশ্রয়গুলো অবস্থান। এখানে ইংরেজ জাহাজগুলো নিরাপদে অবস্থান করতে পারতো। ১৮শ ও উনবিংশ শতাব্দীতে এই পোতাশ্রয়গুলোকে কেন্দ্র করে অনেকগুলো দূর্গ গড়ে উঠে যার কয়েকটি এখনও ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে রয়েছে সেন্ট জন্সে অবস্থিত শার্লি হাইট্স এবং নিলসন ডকইয়ার্ড।
বিখ্যাত ইংরেজ নৌ কমান্ডার হোরাশিও নিলসন যুবক অবস্থায় প্রায় তিন বছর এন্টিগুয়ায় কাজ করেন। একটি ফরাসি নৌবহরকে পশ্চাদ্ধাবন করতে গিয়ে ১৮০৫ সালে তিনি পুনরায় এই দ্বীপে যান। ট্রাফালগার যুদ্ধ সমাপ্ত হওয়ার পর তার এই পশ্চাদ্ধাবন শেষ হয়। ইংল্যান্ডের রাজা উইলিয়াম ৪-ও ১৭৮০-র দশকে নৌবাহিনীর একজন প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে এন্টিগুয়ায় ছিলেন।
১৮৩৪ সালে এই দ্বীপে দাসপ্রথা বিলুপ্ত হয়। কিন্তু এরপরও দাসদের অবস্থার বিশেষ কোন উন্নতি সাধিত হয়নি। বিশেষ করে চিনির কারখানাসমূহে তাদের কঠোর আগের মতোই অক্রান্ত পরীশ্রম করতে হতো। এছাড়া মুক্তিপ্রাপ্ত দাসদের জন্য কোন জমি অবশিষ্ট ছিলো না, আর জমির মালিকরা তাদেরে সাথে আগের মতোই ব্যবহার করতো। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে এসব বৈষম্যের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠে। শ্রমিকরা মূলত তাদের নিম্ন মজুরি এবং জীবনযাত্রার নিম্ন মানের তা প্রচার করে এর বিরুদ্ধে সংগ্রাম শুরু করে। ১৯৩৯ সালে সেখানে প্রথম শ্রমিক আন্দোলন দানা বেঁধে উঠে।
[সম্পাদনা] এন্টিগুয়া লেবার পার্টি
১৯৪৩ সালে চলতি ম্রমিক আন্দোলনের সভাপতি নির্বাচিত হন ভার কর্নওয়াল বার্ড। তিনি অন্যান্য শ্রমিক দল ও সংঘসমূহকে এক্রতিত করে এন্টিগুয়া লেবার পার্টি (এএলপি) প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে এই দল প্রথমবারের মত অনেকগুলো আসন লাভ করে। এরপর প্রায় কয়েক দশক ধরে বার্ড ও তার পরিবার এন্টিগুয়ার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে।
১৯৬৭ সালে এন্টিগুয়া যুক্তরাজ্যের একটি সহযোগী শক্তির মর্যাদা রাভ করে যার ফলে সেখানে সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীন স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮১ সালে নভেম্বর মাসে এন্টিগুয়া একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়, এর সাথে বারবুডাকে একত্রিত করে এন্টিগুয়া ও বারবুডা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয় যদিও বারবুডাবাসীরা নিজেদের আলাদা রাষ্ট্রের দাবী করেছিল। বারবুডাবাসীদের দাবীর মর্যাদা রক্ষার জন্য বারবুডাকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অভ্যন্তরীন স্বায়ত্তশাসনের ক্ষমতা দেয়া হয়। তার পরও বারবুডাবাসীর আন্দোলন থেমে থাকেনি। এখনও স্বাধীনতার তাবীই বারবুডার রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচ্য বিষয়। যাহোক, এই রাষ্ট্রটি কমনওয়েল্থ অফ ন্যাশন্স-এর সদস্য।
[সম্পাদনা] স্বাধীন এন্টিগুয়া ও বারবুডা
স্বাধীনতার পর বার্ড দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালে অবসর নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি এই পদে বহাল ছিলেন। তার পর প্রধানমন্ত্রী হন বার্ডের ছেলে লেস্টার বার্ড। রেস্টার বার্ড দেশটির অর্থনৈতিক পরিবর্তনে দক্ষ চালকের ভূমিকা পালন করেন। তবে এর সাথে বার্ড পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসতে থাকে। ১৯৯০ সারে একটি আন্তর্জাতিক অস্ত্র চোরাচারানকারী চক্রের সাথে লেস্টার বার্ডের ভাই ভার বার্ড জুনিয়রের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া যায়। ১৯৯৬ সালে আরেক ভাই আইভর বার্ড কোকেইন ব্যবসার দায়ে আটক হন। একই সময় লেস্টারের অর্থমন্ত্রীকে অবসর নিতে বাধ্য করা হয়। তার প্রতি অভিযোগ ছিলো যে, তিনি আমদানিকৃত একটি ভিন্টেজ রোল্স-রয়েস গাড়ির জন্য রাষ্ট্রকে সম্পূর্ণ রাজস্ব দেন নি। এছাড়া উপকূলবর্তী ব্যাংকসমূহকে পুনর্গঠন করার কথা বরা হয়। দাবী উঠে এই ব্যাংকসমূহে অর্থলগ্নি চলছে। ১৯৯৭ সালে অর্থলগ্নির দায়ে ৫ টি রাশিয়ান মালিকানাধীন ব্যাংক বন্ধ করে দেয়া হয়।
এধরণের নানা অভিযোগ সত্ত্বেও বার্ডের লেবার পার্টি ১৯৯৯ সারে আবার নির্বাচিত হয়। বার্ড মন্ত্রনালয়ে কিছু পরিবর্তন আনেন। এর মধ্যে রয়েছে তার ভাইবার বার্ড জুনিয়র যে ১৯৯০ সারেই সরকারী দপ্তর থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছিলো। ২০০৪ সালের নির্বাচনে ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ পার্টি আইনসবায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। এর ফলে এন্টিগুয়া ও বারবুডায় লেবার পার্টির যুগের অবসান হয়। লেস্টার বার্ড হেরে যান এবং ইউপিপি'র বাল্ডউইন স্পেন্সার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
[সম্পাদনা] রাজনীতি
[সম্পাদনা] প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ
[সম্পাদনা] ভূগোল
[সম্পাদনা] অর্থনীতি
[সম্পাদনা] জনসংখ্যা
[সম্পাদনা] সংস্কৃতি
[সম্পাদনা] আরও দেখুন
[সম্পাদনা] বহিঃসংযোগ
উত্তর আমেরিকার দেশ ও রাজ্য সমূহ |
---|
এন্টিগুয়া ও বারবুডা • বাহামা • বার্বাডোস • বেলিজ • কানাডা • কোস্টা রিকা • কিউবা • ডোমিনিকা • ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র • এল সালভাদর • গ্রানাডা • গুয়াতেমালা • হাইতি • হুন্ডুরাস • জামাইকা • মেক্সিকো • নিকারাগুয়া • পানামা • সেইন্ট কিট্স ও নেভিস • সেন্ট লুসিয়া • সেইন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইন • ত্রিনিদাদ ও টোবাগো • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অধীনতা: ডেনমার্ক: গ্রীনল্যান্ড • ফ্রান্স: গুয়াদুলুপ ∙ মার্টিনিক ∙ সেইন্ট পিয়েরে ও মিকুয়েলন • হল্যান্ড: আরুবা ∙ ওলন্দাজ এন্টিলেস • যুক্তরাজ্য: অ্যাঙ্গুইলা ∙ বারমুডা ∙ ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ ∙ কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জ ∙ মন্টসেরাট ∙ টার্কস্ ও কেইকোস দ্বীপপুঞ্জ • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: নাভাসা দ্বীপপুঞ্জ ∙ পুয়ের্তো রিকো ∙ মার্কিন ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ |