সেট তত্ত্ব
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সেট তত্ত্ব
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] আবিষ্কার
বিখ্যাত জার্মান গণিতবিদ গেয়র্গ কান্টর (১৮৪৫-১৯১৮) সেটতত্ত্বের প্রবর্তক। বর্তমানে অনেক আধুনিক উন্নত গনিত কাজের ভিত্তি হিসেবে এই সেট তত্ত্ব ব্যবহৃত হয়।
[সম্পাদনা] সেট কী
কোনো বস্তু, সংখ্যা, চিন্তা ইত্যাদির সমারোহকে বলা হয় সেট। সেটের প্রতিটি বস্তুকে বলা হয় সেটের উপাদান(elements) বা সদস্য(members)।
[সম্পাদনা] ব্যবহার
(১) প্রতিটি সদস্য কে তালিকা ভুক্ত করে; উদাহরণ স্বরুপ A={3,5,7,9,11} ঠিক কোন ধারায় সদস্যগুলোকে লেখা হছে সেটা কোন বিবেচ্য বিষয় নয় এবং প্রতিটি উপাদান কেবলমাত্র একবার তালিকাভুক্ত করা হয়।
(২) একটি নির্দিষ্ট নমুনা প্রকাশের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান তালিকাভুক্ত করে এবং ডট চিহ্ন দিয়ে সেই নমুনার ধারাবাহিকতা প্রকাশ করে। যেমন, A={2,4,6,8,.............}
(৩) কোন বিবরন দিয়ে যেমন, S={সকল বেজোড় সংখ্যাসমূহ}
(৪) বীজগণিতীয় প্রকাশের মাধ্যমে; যেমন C={x : 2 < x < 7, x হলো একটি পূর্ণ সংখ্যা} এর অর্থ হলো, C এমন সেট যার উপাদান x পূর্ণ সংখ্যা এবং x এর মান 2 ও 7 মাঝে অবস্থান করে। অর্থাৎ C={3,4,5,6}
[সম্পাদনা] সেটের প্রকারভেদ
(১) একটি সেটের সবগুলো উপাদানই যদি তালিকাভুক্ত থাকে তাহলে সেই সেট কে বলা হয় নির্দিষ্ট সেট বা (finite) সেট। যেমন {3,7,9}.
(২) আবার কোন সেটের সব উপাদান যদি তালিকাভুক্ত করা অসম্ভব হয়, তাকে বলে অসীম বা (infinite) সেট। যেমন, A={2,4,6,8,.............} যেখানে ডট গুলোর অর্থ হলো ধারাটি একই ভাবে চলতে থাকবে।
(৩) আবার কোন সেটে উপাদান না থাকলে তাকে বলে নাল বা শূন্য(null) সেট। একে অথবা {} দিয়ে প্রকাশ করা হয়।
[সম্পাদনা] সেটের সদস্যপদ
এই চিহ্নটি দিয়ে বোঝানো হয় বস্তুটি কোন সেটের সদস্য। যেমন 7 হলো S={2,5,6,7,9} সেটের একটি সদস্য, তাই আমরা লিখতে পারি
আবার
চিহ্নটি দ্বারা বোঝনো হয় বস্তুটি সেটের সদস্য নয়। যেমন 3 সংখ্যাটি পূর্বের S সেটের সদস্য নয়; তাই আমরা লিখি
[সম্পাদনা] সেটের অর্ডার (বা কার্ডিনালিটি)
একটি সেটে যতগুলো উপাদান থাকে, তাদের সংখ্যাকে সেই সেটের অর্ডার বলে। একটি A সেটে যদি 5 টি সদস্য থাকে, তাহলে তার অর্ডার (বা কার্ডিনালিটি) হলো 5 এবং আমরা লিখি n(A)=5.
[সম্পাদনা] সাব-সেট
যদি একটি সেট A-এর সকল সদস্য অন্য আরেকটি সেট B-এরও সদস্য হয়, তাহলে বলা যাবে, A হলো B এর সাব-সেট। যেমন, A={p,q,r} এবং B={p,q,r,s} হলে আমরা লিখি প্রতিটি সেটের অন্তত দুটি সাব-সেট রয়েছে; একটি হলো সেটটি নিজেই এবং অপরটি হলো শূণ্য সেট।
[সম্পাদনা] উদাহরন
{a,b,c} সেটটির সকল সাবসেটগুলো বের করতে হলে, সাবসেট গুলো হবে , {a}, {b}, {c}, {a,b}, {a,c}, {b,c} এবং {a,b,c}। একটি প্রদত্ত সেটের সাম্ভাব্য সকল সাবসেট গুলো থেকে যদি নিজেকেই বাদ দিয়ে বাকি সাব সেট গুলো রাখা হয় তাহলে তাদের কে বলা হয় প্রপার সাব সেট(proper subset)। যদি একটি সেটে n সংখ্যাক উপাদান থাকে তাহলে মোট যতগুলো সাব সেট পাওয়া যাবে তার পরিমান হলো- N=2n
[সম্পাদনা] ইউনিভার্সাল সেট
একটি সমস্যায় বিদ্যমান সবগুলো উপাদান কে নিয়ে যে সেট গঠিত হয়, তাকে সেই সমস্যার সাপেক্ষে ইউনিভার্সাল সেট বলা হয়। যেমন ১১ সংখ্যা পর্যন্ত সকল বিজোড় সংখ্যার (১১ সংখ্যাটি সহ) ইউনিভার্সাল সেটটি হলো- ={1,3,5,7,9,11} একটি সেট এর কমপ্লিমেন্ট সেট হলো এমন একটি সেট যার উপাদান গুলো ইউনিভার্সাল সেট
এর ভিতরে নেই। যেমন যদি A={2,4,6} এবং
={1,2,3,4,5,6,7} তাহলে A-এর কমপ্লিমেন্ট সেট হলো A`={1,3,5,7}
[সম্পাদনা] ইকুয়ালিটি এবং ইকুইভ্যালেন্স
একটি সেটে ঠিক কোন উপাদানটির পর কোন উপাদান রাখা হলো সেটা কোন বিবেচ্য বিষয় নয়। তাই {a,b,c,d} এবং {c,a,b,d} হলো একই সেট। দুটি সেট কে ইকুয়াল(equal) বলা হবে যদি তাদের ঠিক একই উপাদান থাকে। তাই যদি A={2,3,5,8} এবং B={3,8,2,5} হয়, তাহলে A=B দুটো সেট কে ইকুইভ্যালেন্ট বলা হবে যদি তাদের উভয়ের সমান সংখ্যাক উপাদান থাকে। তাই যদি A={5,7,9} এবং B={a,b,c} হয়, তাহলে n(A)=n(B)=3 এবং A ও B সেট দুটো ইকুইভ্যালেন্ট(equivalent)
[সম্পাদনা] ভেন ডায়াগ্রাম
ভেন ডায়াগ্রাম দিয়ে সেট থিওরির অনেক সমস্যার সমাধান করা যায়। একটি ইউনিভার্সাল সেট কে প্রকাশ করা হয় আয়তক্ষেত্র দিয়ে এবং এই সেটের সাব-সেট গুলোকে প্রকাশ করা হয় বৃত্ত দিয়ে। এই চিত্রে ছায়া দেওয়া অংশ দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে A-এর কমপ্লিমেন্ট অর্থ্যাৎ Ac। এছাড়াও বৃত্তের ভিতরে বৃত্ত দিয়ে সাব-সেট গুলোকে প্রকাশ করা হয়। যেমন
[সম্পাদনা] ইউনিয়ন এবং ইন্টারসেকশন
দুটো সেট A ও B-এর ইন্টারসেকশন হলো সেই সদস্য গুলোর সেট যারা উভয় সেট A ও B-এরই সদস্য। সেক্ষেত্রে যদি A={2,4,7} এবং B={2,3,7,8} হয়, তাহলে A ও B-এর ইন্টারসেকশন হলো {2,7} আমরা লিখি ={2,7} চিত্রে ভেন ডায়াগ্রামে শেড দেয়া অংশে দেখানো হয়েছে
. দুটো সেট A ও B-এর ইউনিয়ন A ও B-এর সকল সদস্য নিয়ে গঠিত। সেক্ষেত্রে যদি A={3,4,6} এবং B={2,3,4,5,6,7,8} হয়, তাহলে ও -এর ইউনিয়ন হলো আমরা লিখি
={2,3,4,5,6,7,8}. যদি দুটো সেট A ও B-এর মধ্যে কোনও একটি সদস্যও কমন না থাকে, তাহলে সেই দুটো সেট A ও B-কে বলা হবে ডিসজয়েন্ট(disjoint) সেট। আমরা লিখি
=