আলবার্ট আইনস্টাইন
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আলবার্ট আইনস্টাইন, চিত্রগ্রাহকঃ অরেন যে. টারনার, ১৯৪৭ |
|
জন্ম | মার্চ ১৪, ১৮৭৯ উলম, বাডেন ভুর্টেমবার্গ, জার্মানি |
---|---|
মৃত্যু | এপ্রিল ১৮ , ১৯৫৫ প্রিন্সটন, নিউজার্সি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
বসবাস | সুইজারল্যান্ড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
জাতীয়তা | জার্মান (১৮৭৯-৯৬,১৯১৪-৩৩) সুইস (১৯০১-৫৫) |
কর্মক্ষেত্র | পদার্থবিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠান | সুইস পেটেন্ট অফিস, জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়, চার্লস বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাগ, কাইজার ভিলহেম ইনস্টিটিউট, লেইডেন বিশ্ববিদ্যালয় , ইনস্টিটিউট ফর এডভান্সড স্টাডি |
Alma Mater | ইটিএইচ, জুরিখ |
কেন বিখ্যাত | সাধারণ আপেক্ষিকতা, বিশেষ আপেক্ষিকতা ব্রাউনীয় গতি, আলোক তড়িৎ ক্রিয়া |
উল্লেখযোগ্য পুরস্কার | পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার ১৯২১ |
আলবার্ট আইনস্টাইন (জার্মান Albert Einstein উচ্চারণ আল্বেয়াট্ আয়ন্শ্টায়ন্) (১৪ই মার্চ, ১৮৭৯ - ১৮ই এপ্রিল, ১৯৫৫) একজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী। আলবার্ট আইনস্টাইন জন্মসূত্রে ছিলেন জার্মান । তিনি সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব ও বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের জনক হিসাবে এবং আলোর কণাধর্মের ব্যাপারে সাহসী অনুকল্পের (Hypothesis) জন্য সর্বাধিক পরিচিত। তিনিই সম্ভবত বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে পরিচিতিপ্রাপ্ত বিজ্ঞানী।
সূচিপত্র |
[সম্পাদনা] প্রাথমিক জীবন
আইনস্টাইন ১৮৭৯ সালের (ঊনবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বিখ্যাত তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল'র মৃত্যুর বছর) ১৮ই মার্চ উল্ম শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর শৈশব কাটে মিউনিখ-এ। সেখানে তাঁদের পরিবারের একটা ছোট্ট তাড়িৎ যন্ত্রাদি নির্মাণের দোকান ছিল। তিন বছর বয়সের পর থেকে প্রথম কথা বলা শুরু করলেও অল্পবয়সেই তাঁর মধ্যে প্রকৃতির প্রতি অপার কৌতুহল এবং বিভিন্ন জটিল গাণিতিক ধারণাসমূহ বোঝার ক্ষেত্রে বিশেষ পারঙ্গমতা পরিলক্ষিত হয়। ১২ বছর বয়সে তিনি নিজে নিজেই ইউক্লিডীয় জ্যামিতি আয়ত্ত করেন।
আইনস্টাইন মিউনিখের বিদ্যালয়ের একঘেয়ে পড়াশুনা এবং নিয়মকানুনের প্রতি কড়াকড়িকে ঘৃণা করতেন। বারম্বার ব্যবসায়ে ব্যার্থতার দরুণ জার্মানি ছেড়ে তাঁদের পরিবার ইতালির মিলানে পাড়ি জমায়। আইনস্টাইনের তখন ১৫ বছর বয়স। এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে তিনি বিদ্যালয়ের পাঠ পরিত্যাগ করেন। মিলানে একটি বছর তিনি পরিবারের সাথে কাটিয়ে দেন। ততদিনে 'কঠিন এই দুনিয়ায় নিজের পথ নিজেকেই দেখতে হবে' কথাটি তিনি অনুধাবণ করতে শিখে গেছেন, আর তাই সুইজারল্যান্ড'র আরাও (Aarau)-তে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা সমাপ্ত করে তিনি জুরিখ-এ অবস্থিত সুইস ফেডেরাল ইন্সটিটিউট অফ টেকনলজি (Swiss Federal Institute of Technology)-তে ভর্তি হন। কিন্তু ওখানকার পাঠদান পদ্ধতি তাঁর ভালো লাগতো না। প্রায়শই তাই ক্লাস ফাঁকি দিয়ে তিনি ওই সময়টাতে পদার্থবিজ্ঞানে নিজের খেয়ালমত বিষয়গুলি পড়তেন নতুবা তাঁর সাধের ভায়োলিনটি বাজাতেন। জনৈক সমপাঠীর ক্লাস-লেকচার পড়ে পড়েই তিনি পরীক্ষাগুলি উৎরে যেতেন। এমনি করেই ১৯০০ সালে তিনি স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। তাঁর সম্পর্কে অধ্যাপকগণের ধারণা তেমন উঁচু ছিল না। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন পদে চাকরির জন্য আইনস্টানকে মনোনয়ন দেওয়ার ব্যাপারেও তাঁরা রাজি ছিলেন না।
দুই বছর তিনি টিউটর এবং বদলি শিক্ষক(Substitute teacher) হিসাবে কাজ করেন। ১৯০২ সালে তিনি বার্নে অবস্থিত সুইস পেটেন্ট কার্যালয়ে পরীক্ষকের কাজ যোগাড় করতে সমর্থ হন। ১৯০৩ সালে তিনি বহুকৌশল(Polytechnique) শিক্ষালয়ের এককালীন সহপাঠিনী মিলেভা মেরিক এর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের দুটি পুত্রসন্তান হয়। কিন্তু পরবর্তিতে তাঁদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে এবং আইনস্টাইন পুনরায় বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
[সম্পাদনা] প্রথমদিককার বৈজ্ঞানিক প্রকাশনাসমূহ
১৯০৫ সালে আণবিক মাত্রাদির (Dimensions of molecules) উপর লেখা তাঁর একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধের জন্য জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করেন। ঐ একই বছরে তিনি পরপর তিনটি তাত্ত্বিক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন যার প্রতিটিই বিংশ শতকের পদার্থবিদ্যার অগ্রগতির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়। এই গবেষণাপত্রগুলির প্রথমটি ছিল ব্রাউনীয় গতি(Brownian motion) সম্পর্কিত যেখানে কোন প্রবাহীর(Fluid) মধ্যে অনিয়মিতভাবে(Randomly) ছড়িয়ে থাকা কণাসমূহের গতিসম্পর্কে তিনি কয়েকটি তাৎপর্য্যপূর্ণ অনুমান করেছিলেন। এই অনুমানগুলি পরবর্তিতে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়।
দ্বিতীয় গবেষণাপত্রটির বিষয়বস্তু ছিল আলোক-তাড়িৎ ক্রিয়া(Photoelectric effect) যেখানে আলোর প্রকৃতি সম্পর্কে আইনস্টাইন একটি বৈপ্লবিক প্রকল্প(Hypothesis) উপস্থাপন করেছিলেন। এই গবেষণাপত্রটিতে আলো'কে বিশেষ বিশেষ অবস্থায় কণার সমষ্টি হিসাবে বিবেচনা করা যায় শুধু এটা বলে'ই তিনি ক্ষান্ত হননি, বরং এটাও বলেছেন যে, নির্দিষ্ট একটি বিকিরণের অন্তর্গত যেকোন একটি আলোক কণার বা ফোটনের(Photon, তাঁর দেয়া নাম) দ্বারা পরিবাহিত শক্তি উক্ত বিকিরণের কম্পাঙ্কের(Frequency) সমানুপাতিক। সূত্রটি হলো E = hν, যেখানে E দ্বারা বিকিরণের শক্তি, h দ্বারা সার্বজনীন প্ল্যাংকের ধ্রুবক এবং ν দ্বারা বিকিরণের কম্পাংককে সূচিত করা হয়। এই গবেষণাপত্রটিতে প্রকাশিত একটি আলোক রশ্মির অন্তর্গত শক্তি স্বতন্ত্র এককসমূহ বা কোয়ান্টার মাধ্যমে পরিবাহিত হয় সম্বন্ধীয় প্রস্তাবটি আলোক শক্তিকে নিরবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়াদির প্রকাশ হিসেবে বিবেচনা করবার শতবর্ষের পুরাতন ঐতিহ্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করে। বলতে গেলে, কেউই শুরুতে আইনস্টাইনের এই যুগান্তকারী প্রস্তাবটি সমর্থন করেন নি। এমনকি, প্রস্তাবণার প্রায় এক দশক পরে যখন মার্কিন পদার্থবিদ রবার্ট অ্যানড্রুজ মিলিকান তত্ত্বটিকে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করেন, তিনি স্বয়ং প্রাপ্ত ফলাফল আইনস্টাইনকে সমর্থন করছে দেখে বিস্মিত এবং কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
[সম্পাদনা] আপেক্ষিকতা তত্ত্ব
[সম্পাদনা] সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব
এই বিষয়ে মূল নিবন্ধের জন্য দেখুন: সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব
[সম্পাদনা] বিশেষ আপেক্ষিক তত্ত্ব
এই বিষয়ে মূল নিবন্ধের জন্য দেখুন: বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব
[সম্পাদনা] আইনস্টাইনের প্রতি প্রথমদিককার প্রতিক্রিয়াসমূহ
[সম্পাদনা] বিশ্ব নাগরিক
[সম্পাদনা] বিবিধ তথ্য
- বিজ্ঞানের বাইরে আইনস্টাইনের প্রিয় দুইটি বিষয় ছিল নৌবিহার এবং সংগীত,বিশেষ করে বাখ এবং মোৎসার্টের ক্লাসিক্যাল মূর্চ্ছণা। তিনি ভায়োলিন বাজাতে পছন্দ করতেন।
- আইনস্টাইন ৪ বছর বয়সের পূর্বে কথা বলতে পারতেন না এবং ৯ বছর বয়সে তিনি প্রথম লিখতে শিখেন।
- মৃত্যুর সময় আইনস্টাইন তাঁর মস্তিষ্ক গবেষণার জন্য বিজ্ঞানীদের দান করে যান।
- এই মনীষী পোশাকের ব্যাপারে ছিলেন একদমই উদাসীন। কারণ তাঁর কাছে সময় ছিল অতি মূল্যবান।
[সম্পাদনা] আইনস্টাইনের বিখ্যাত কিছু উক্তি
- ১৯৫২ সালে আইনস্টাইনকে ইস্রায়েল রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য আহ্বান জানানো হলে, তিনি বলেন,
আমি মনে করি রাজনীতির চেয়ে সমীকরণ বেশী গুরুত্বপূর্ণ । কারণ, রাজনীতি লেখা হয় বর্তমানের খসড়া খাতায় আর সমীকরণ লেখা থাকে মহাকালের অজর গ্রন্থে। |